"আল-ওয়ালা ওয়াল-বারা"
আল্লাহর জন্যই ভালবাসা এবং আল্লাহর জন্যই ঘৃনা করা। যে কাজে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালার সন্তুষ্টি সেই কাজের জন্যই যে কোন কিছু ভালোবাসা। প্রকারান্তরে যে কাজে-কর্মে আল্লাহ তা'য়ালার অসন্তুষ্টি তা মনে-প্রাণে ঘৃণা করা।
উদাহরণসরুপ:
আল-ওয়ালা:
কথা, কাজ, বিশ্বাস এবং স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্বগণ- কিছু জিনিস যা আল্লাহ তা'য়ালাকে সন্তুষ্ট করে সেগুলো হচ্ছে-আল্লাহর স্মরণ (যিকির), আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা,আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা এবং মু’মিনদের ভালবাসা"
ওয়াল বারা:
গীবত, যিনা,শির্ক এবং কুফর হচ্ছে এমন কতগুলো জিনিস যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ঘৃণা করেন এবং এগুলো মু’মিনদেরকেও অবশ্যই ঘৃণা করতে হবে৷
[আল-ক্বাওয়ায়িদুন-নূরানিয়্যাহ আল-ফিক্বিয়াহ]
মুসনাদে আহমাদ এ সংকলিত হাদীস, সাহাবা আল-বাররা বিন আজিব রাদ্বি'য়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "আল্লাহর জন্য ভালবাসা এবং আল্লাহর জন্য ঘৃণা করা হচ্ছে ঈমানের সবচেয়ে দৃঢ় বন্ধন"
ত্বাবারানী, আল কবির, ইবনে শায়বা সংকলিত হাদীস যা ইবনে মাস'উদ (রাদ্বি'য়াল্লাহু আনহু) থেকে মারফু-রূপে বর্ণিত তাহক্বিক হাসান রূপে আখ্যায়িত করেছেন, "ঈমানের দৃঢ়তম বন্ধন হলো শুধুমাত্র তাঁরই জন্য ভালবাসা এবং তাঁরই জন্য শত্রুতা"
ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আরো বলেছেন, ”যে আল্লাহর জন্য ভালবাসে এবং আল্লাহর জন্য ঘৃণা করে, এবং যে আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব নষ্ট করে অথবা তার জন্য শত্রুতা ঘোষণা করে, সে আল্লাহর কাছ থেকে নিরাপত্তা পাবে৷ এটা ছাড়া কেউ প্রকৃত ঈমানের স্বাদ পাবে না, যদিও তার সওম ও সালাত অনেক হয়৷ মানুষ দুনিয়াবী বিষয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলে, যা তাদেরকে কোন উপকারই করতে পারবে না৷” [ইবনে রজব আল হাম্বালী, জামি আল উলূমওয়াল হাকিম, পৃঃ৩০]
ইবনে তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, "ঈমানের ঘোষণা- ‘নাই কোন ইলাহ, ইবাদত যোগ্য আল্লাহ ছাড়া’-এর দাবী হচ্ছে তুমি শুধু আল্লাহর জন্য কাউকে ভালবাসবে, কাউকে শুধু আল্লাহর জন্য ঘৃণা করবে, নিজেরা বন্ধুত্ব করবে আল্লাহর জন্য, কারও সাথে শত্রুতা ঘোষণা করবে শুধু আল্লাহর জন্য; এর দাবী হচ্ছে তুমি ভালবাসবে যা আল্লাহ ভালবাসেন, তুমি ঘৃণা করবে যা আল্লাহ ঘৃণা করেন” [আল-ইহ্তিজাল ফিল ক্বদর, পৃ:৬২]
মহান আল্লাহ বলেন,
لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ ۚ أُولَٰئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الْإِيمَانَ وَأَيَّدَهُمْ بِرُوحٍ مِنْهُ ۖ وَيُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ ۚ أُولَٰئِكَ حِزْبُ اللَّهِ ۚ أَلَا إِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
আয়াত-২২ অর্থ : "যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না, যদিও তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। তাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর অদৃশ্য শক্তি দ্বারা। তিনি তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। জেনে রাখ, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে"। [সূরাহ আল-মুজদালাহ, আয়াত : ২২]
সমাপ্ত
আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক ইন শা আল্লাহ ’ লেখাটি শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে!
0 Comments