আমি যদি খাবারের মত একটা বেসিক চাহিদাকে শুধুমাত্র আল্লাহর খুশির জন্যে কন্ট্রোল করতে পারি, তাহলে কেন আল্লাহর খুশির জন্যে দুনিয়ার মোহগুলিকে ছাড়তে পারবো না? আমি যদি আমার রবের খুশির জন্যে খাওয়া-পানির মতন হালাল কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারছি, তাহলে কিসে আমাকে সেই একই রবের সন্তুষ্টির জন্যে হারাম কাজ থেকে দূরে থাকতে বাধা দিচ্ছে? পেট খালি। অন্তরে তাকওয়া। তখন আর রাগারাগি, খারাপ ব্যবহার, গীবত, অশ্লীলতা, অন্যায়-অবিচার — এসব করার এনার্জি থাকেনা।
রোজার মধ্যে আরেকটা জিনিসের সলিড ট্রেনিং হয় যেটা হচ্ছে তাকওয়া। তাকওয়া মানে জীবনে আল্লাহর উপস্থিতি নিয়ে সচেতন হওয়া এবং আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন এই ভয়ে কাঁটাভর্তি পথের মধ্যে চলার মতো করে গুণাহ থেকে গা বাঁচিয়ে চলা। তাকওয়ার ট্রেইনিং রোজায় হয় যখন খাবার সামনে থাকা সত্ত্বেও আমরা তা খাইনা। হয়ত রান্নাঘরে খাবার আছে। প্রচণ্ড ক্ষুধার মধ্যে আমি একটুপ মুখে পুরে নিলে কেউ জানবেও না যে, আমি দিব্যি রোজা রেখে খেয়ে যাচ্ছি! অথচ আমরা কেউ কিন্তু সেটা করিনা! “কেউ না দেখলে কি হবে আল্লাহ্ তো দেখছেন!” এটা আমাদের মাথায় তখন থাকে!
প্রচণ্ড ক্ষুধার কষ্টেও আমরা রোজা ভাঙ্গিনা। লোক দেখানোর কোন এলেমেন্ট এখানে নেই। পিউরলি আল্লাহর জন্যেই এটুকু আমরা করি! এটা খুব পাওয়ারফুল। এভাবে অন্তরকে ট্রেইন করতে পারলে প্রচণ্ড রাগের মধ্যেও আমরা চিল্লাবো না। প্রচণ্ড কষ্টেও হতাশ হবো না। প্রচণ্ড ক্রাইসিসের মধ্যেও আশা হারাবো না। প্রচণ্ড গুনাহ করার বাসনা উঠলেও আল্লাহকে ভুলে যাব না। আমাদের মানুষের ভুল ধরা কমে যাবে। মাফ করা সহজ হবে। সাদাকাহর জন্যে পকেট থেকে টাকা বের করে দেওয়া সহজ হবে। অন্ধকারের মধ্যেও আলোর সন্ধান মিলবে।
ইয়া রব! আমাদের রমাদান পর্যন্ত পৌঁছে দিন। আল্লহুম্মা বাল্লিগনা রমাদান।
আমিন
(নোটঃ শা'বান মাস চলছে! শা'বান মাসে রসুল (সাঃ) অনেক বেশি রোজা রাখতেন। স্কলাররা রমাদানের প্রস্তুতি হিসেবে শা'বান মাসে নফল রোজা রাখার সাজেশান দেন। তাহলে রোজা আসতে আসতে অলরেডি অনেকখানি তাকওয়ার ট্রেনিং হয়ে যায় এবং রমাদানে রোজা রাখার আনন্দ বেড়ে যায় ইনশাল্লহ।)
কুরআন রেফারেন্সঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
"হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার''। [সুরা বাকারা: ১৮৩]
সমাপ্ত
লেখাঃ শারিন সফি অদ্রিতা (আল্লাহ্ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!)
আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক ইন শা আল্লাহ ’ লেখাটি শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে!
0 Comments